যোগানের সংজ্ঞা/যোগান কাকে বলে?

কোন নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট মূল্যে একজন বিক্রেতা কোন একটি দ্রব্যের যে পরিমাণ বাজারে বিক্রি করতে রাজি থাকে, তাই যোগান।

যোগান কি/যোগান কী

সাধারণত যোগান বলতে কোন বিক্রয়যোগ্য যে পরিমাণ বাজারে বর্তমান থাকে তাকে বুঝায়। কিন্তু অর্থনীতিতে যোগান শব্দটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়।

অর্থনীতিতে যোগান বা সরবরাহ বলতে বিক্রেতা কোন দ্রব্যের যে পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট সময়ে এবং একটি নির্দিষ্ট দামে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে বাজারে উত্থাপিত করে তাকেই বোঝায়। চাহিদার মত যোগানো ও দামের একটি প্রিয়া বা অপেক্ষক। দ্রব্যের দাম বাড়লে যোগান বাড়ে এবং দাম কমলো গান কমে। এভাবে যোগানের রাস এবং বৃদ্ধি ঘটে।

সুতরাং বলা যায় কোন বিক্রেতা বা উৎপাদক প্রতিষ্ঠান যদি কোনো নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট দামে দ্রব্যের যে পরিমাণ বিক্রয় করতে ইচ্ছুক থাকে তাকেই অর্থনীতিতে যোগান বলে।

যোগানের ধারণা

যোগানের উদাহরণ : যখন ধানের কেজি 20 টাকা , তখন একজন কৃষক বা বিক্রেতা 10 মন ধান বিক্রি করেন। আবার যখন দাম বেড়ে 30 টাকা হয় তখন ওই কৃষক বা বিক্রেতা 20 ধান বিক্রির জন্য সরবরাহ করেন।
সুতরাং বলা যায় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে যোগানের পরিমাণ বাড়ে এবং দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে যোগানের পরিমাণ কমে।

যোগান বিধি কি/ যোগান বিধি কাকে বলে।

যোগান বিধির মাধ্যমে দ্রব্যের দামের সাথে যোগানের সম্পর্ক নির্দেশ করে তাকে যোগান বিধি বলে. অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে, দাম বৃদ্ধি পায় যোগান বৃদ্ধি পায় এবং দাম কমে গেলে যোগান ও কমে যায়। দাম এবং যোগানের মধ্যে একটি ক্রিয়াগত সম্পর্ক রয়েছে যাকে যোগান বিধি বলা হয়।

যোগান বিধি অনুযায়ী যখন কোন জিনিসের দাম কমলো বিক্রেতাগণ কম পরিমাণে এবং দাম বাড়লে বেশি পরিমাণে বিক্রয় করতে ইচ্ছুক থাকে। অর্থাৎ কম দামে বাজারে যোগানের পরিমাণ কম হয় এবং বেশি দামে পণ্যের যোগান বেশি হয়।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় কোন দ্রব্যে যখন 20 টাকা তখন তার যোগান হল 30 একক। দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে যখন 25 টাকা হয় তখন দ্রব্যের যোগান বিধি 50 একক হয়। এভাবে দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে যোগান বৃদ্ধি পায় এবং দাম দাম কমার সাথে যোগান ও কম হয়।

সুতরাং বলা যায়, দাম ও যোগানের সম্পর্ক প্রত্যক্ষ ও সমমুখী। অর্থাৎ দাম যেদিকে পরিবর্তিত হয় যোগান ও সেদিকে পরিবর্তিত হয়।

যোগান অপেক্ষক কি?

কোন দ্রব্যের যোগান ওই দ্রব্যের দাম, উপকরণ গুলোর দাম, রুচি পছন্দ , প্রভৃতি অবস্থা কারিগরি জ্ঞান, সময় প্রভৃতি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। সাধারণত কোন দ্রব্যের দাম বাড়লে যোগানের পরিমাণ বাড়ে এবং দাম কমলে যোগানের পরিমাণ কমে। দাম এবং যোগানের ধনাত্মক সম্পর্ক যখন গাণিতিক ভাবে প্রকাশ করা হয়, তখন তাকে যোগান অপেক্ষক বলে।

অর্থাৎ কোন দ্রব্যে যোগান তার দাম, দ্রব্যের সম্পর্ক,কলা-কৌশল সরকারের কর নীতি, ভর্তুকি ইত্যাদি বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয়। এ সকল বিষয়ের সাথে যোগানের যে সম্পর্ক তাকে যোগান অপেক্ষক বলে।

যোগান রেখা/ যোগান রেখা কি?

একটি নির্দিষ্ট সময়ে বিক্রেতা বিভিন্ন দামে দ্রব্যের যে পরিমাণ বিক্রয় করতে প্রস্তুত থাকে তাকে যে রেখার সাহায্যে প্রকাশ করা যায়, তাই যোগান রেখা। অর্থাৎ যে রেখা দ্বারা বিভিন্ন দামে যোগানের পরিমাণ নির্দেশ করা হয়, তাকে যোগান রেখা বলেযোগান সূচিই হল যোগ্যতার রেখার ভিত্তি।

দ্রব্য গান যোগান রেখা জানা থাকলে যোগান রেখা অঙ্কন করা যায়। একটি কাল্পনিক যোগান সূচি হতে তার ভিত্তিতে একটি যোগান রেখা অঙ্কন করা হলো। যোগান সূচি:প্রতিটি কলমের দাম: 10,15,20 টাকা. যোগানের পরিমাণ: 20, 40, 60 টি.

যোগান সূচি কি?

যোগান সূচিই হল যোগ্যতার রেখার ভিত্তি। দ্রব্য গান যোগান রেখা জানা থাকলে যোগান রেখা অঙ্কন করা যায়। একটি কাল্পনিক যোগান সূচি হতে তার ভিত্তিতে একটি যোগান রেখা অঙ্কন করা হলো। যোগান সূচি: সূচিই হল যোগান রেখার ভিত্তি।
যোগান সূচি

দ্রব্য যোগান রেখা জানা থাকলে যোগান রেখা অঙ্কন করা যায়। একটি কাল্পনিক যোগান সূচি হতে তার ভিত্তিতে একটি যোগান রেখা অঙ্কন করা হলো। যোগান সূচি:প্রতিটি কলমের দাম: 10,15,20 টাকা। যোগানের পরিমাণ: 20, 40, 60 টি.যোগান সূচিই হল যোগান রেখার ভিত্তি।

দ্রব্য যোগান রেখা জানা থাকলে যোগান রেখা অঙ্কন করা যায়। একটি কাল্পনিক যোগান সূচি হতে তার ভিত্তিতে একটি যোগান রেখা অঙ্কন করা হলো। প্রতিটি কলমের দাম: 10,15,20 টাকা. যোগানের পরিমাণ: 20, 40, 60 টি।

উপরের যোগানের সূচির ভিত্তিতে একটি যোগান রেখা অঙ্কন করা হলো:
যোগান রেখা

নিচের চিত্রে OX অক্ষে যোগানের পরিমাণ এবং OY অক্ষে দাম নির্দেশ করা হয়েছে. চিত্রের SS’ রেখাটি হবে যোগান রেখা। দ্রব্যের মূল্য যখন 10 টাকা তখন যোগানের পরিমাণ হল 20 একক। OY রেখার 10 সূচক বিন্দু এবং OX রেখার 20 সূচক বিন্দু হতে দুটি লম্ব অঙ্কন করলে তারা পরস্পর A বিন্দুতে মিলিত হবে।

আবার মূল্য যখন 15 টাকা তখন যোগানের পরিমাণ হল 40 একক। এক্ষেত্রে OY রেখার 15v সূচক বিন্দু এবং OX রেখার 40 সূচক বিন্দু হতে দুটি লম্ব অংকন করলে সমন্বয়কারী B বিন্দুটি পাওয়া যায়। অনুরূপভাবে মূল্য যখন 20 টাকা তখন যোগানের পরিমাণ হল 60 একক।

OY রেখার 20 সূচক এবং OX রেখার 60 সূচক বিন্দু হতে দুটি লম্ব অংকন করলে সমন্বয়কারী C বিন্দুটি পাওয়া যায়. এখন A,B,C বিন্দুগুলো যোগ করলে যে SS’রেখাটি পাওয়া যায় তাই হল যোগান রেখা বা সরবরাহ রেখা। এভাবে একটি কাল্পনিক রেখা অঙ্কন করা যায়।

Write A Comment