পর্যায় সারণি কাকে বলে (Periodic Table)

পর্যায় সারণি (Periodic Table): একই ধর্ম বিশিষ্ট মৌল সমূহকে একই গ্রুপে এবং ভিন্ন ধর্মবিশিষ্ট মৌল সমূহকে পর্যায় বা সারিতে স্থান দিয়ে আবিষ্কৃত সকল মৌলকে নিয়ে বর্তমানে যে সারণিটি তৈরি করা হয়েছে তাকে পর্যায় সারণি বলে।

আজকের আধুনিক পর্যায় সারণিটি আমরা একদিনে পাইনি এর পিছনে রয়েছে অনেক অনেক বিজ্ঞানীর অক্লান্ত পরিশ্রম । এর আগে বিভিন্ন বিজ্ঞানী বিভিন্ন ধরনের পর্যায় সারণি উপস্থাপন করেছেন।

তবে তাদের মধ্যে বর্তমানের আধুনিক পর্যায় সারণিটি হল অধিক গ্রহণযোগ্য এবং উৎকৃষ্ট। আর এই আধুনিক পর্যায় সারণিতে বিজ্ঞানী দ্বিমিত্রি মেন্ডেলিফ এর অবদান রয়েছে সবথেকে বেশি এবং 1869 খ্রিস্টাব্দে মেন্ডেলিফ পর্যায় সারণি আবিষ্কার করেন।

তাই দ্বিমিত্রি মেন্ডেলিফ কে আধুনিক পর্যায় সারণির জনক বলা হয়। বর্তমানে আধুনিক পর্যায় সারণিতে ৭টি পর্যায় ও ১৮টি গ্রুপ বিদ্যমান রয়েছে।

পর্যায় সারণির বৈশিষ্ট্য (Characteristics of the Periodic Table)

পর্যায় সারণি মূলত একটি ছক বা টেবিল। টেবিলে যেমন সারি (Row) এবং কলাম (Column) থাকে পর্যায় সারণিতেও তেমনি সারি ও কলাম আছে। পর্যায় সারণির বাম থেকে ডান পর্যন্ত বিস্তৃত সারিগুলােকে পর্যায় এবং খাড়া কলামগুলােকে গ্রুপ বা শ্রেণি বলে।

আধুনিক পর্যায় সারণির বর্গাকার ঘরগুলােতে মােট 118টি মৌল আছে। পর্যায় সারণিটি এই অধ্যায়ের শুরুতে দেখানাে হয়েছে। আধুনিক পর্যায় সারণির অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বর্তমানে পর্যায় সারণির দিকে লক্ষ রাখলে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ খুঁজে পাওয়া যাবে।

(a) পর্যায় সারণিতে ৭টি পর্যায় (Period) বা অনুভূমিক সারি এবং 18টি গ্রুপ বা খাড়া স্তম্ভ

রয়েছে।

(b) পর্যায় সারণির প্রতিটি পর্যায় বাম দিকে গ্রুপ 1 থেকে শুরু করে ডানদিকে গ্রুপ 18 পর্যন্ত বিস্তৃত।

(c) মূল পর্যায় সারণির নিচে আলাদাভাবে ল্যান্থানাইড (Lanthanide) ও অ্যাকটিনাইড (Actinide) সারির মৌল হিসেবে দেখানাে হলেও এগুলাে পর্যায় সারণির যথাক্রমে 6 এবং 7 পর্যায়ের অংশ।

(d) ( i) পর্যায় সারণির পর্যায় 1 এ শুধু 2টি মৌল রয়েছে।

(ii) পর্যায় 2 এবং পর্যায় 3 এ ৪টি করে মৌল বিদ্যমান রয়েছে।

(iii) পর্যায় 4 এবং পর্যায় 5 এ 18টি করে মৌল বিদ্যমান রয়েছে।

(iv) পর্যায় 6 এবং পর্যায় 7 এ 32টি করে মৌল বিদ্যমান রয়েছে।

(e) (i) পর্যায় সারণির গ্রুপ 1 এ 7টি মৌল রয়েছে।

(ii) গ্রুপ 2 এ 6টি মৌল বিদ্যমান রয়েছে।

(iii) গ্রুপ 3 এ 32টি মৌল বিদ্যমান রয়েছে।

(iv) গ্রুপ 4 থেকে গ্রুপ 12 পর্যন্ত প্রত্যেকটি গ্রুপে  4টি করে মৌল বিদ্যমান রয়েছে।

(v) গ্রুপ 13 থেকে গ্রুপ 17 পর্যন্ত প্রত্যেকটিতে 6টি করে মৌল বিদ্যমান রয়েছে।

(vi) গ্রুপ 18 এ 7টি মৌল বিদ্যমান রয়েছে।

যে সকল মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা 57 থেকে 71 পর্যন্ত এরকম 15টি মৌলকে ল্যান্থানাইড সারির মৌল বলা হয়। যে সকল মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা ৪9 থেকে 103 পর্যন্ত এরকম 15টি মৌলকে অ্যাকটিনাইড সারির মৌল বলা হয়।

ল্যান্থানাইড সারির মৌলগুলাের ধর্ম এত কাছাকাছি এবং অ্যাকটিনাইড সারির মৌলসমূহের ধর্ম এত কাছাকাছি যে তাদেরকে পর্যায় সারণির নিচে ল্যান্থানাইড সারির মৌল এবং অ্যাকটিনাইড সারির মৌল হিসেবে আলাদাভাবে রাখা হয়েছে।

যদি পর্যায় সারণির মৌলগুলােকে তাদের ধর্মের ভিত্তিতে বিবেচনা করা হয় তাহলে নিচের বৈশিষ্ট্যগুলাে লক্ষ করা যায়:

1. পর্যায় সারণির একই পর্যায়ের বাম থেকে ডানের দিকে গেলে মৌলসমূহের ধর্ম ক্রমান্বয়ে পরিবর্তিত হয়।
2. পর্যায় সারণির একই গ্রুপের মৌলগুলাের ভৌত এবং রাসায়নিক ধর্ম প্রায় একই রকমের হয়।

পর্যায় সারণি মনে রাখার কৌশল বা পর্যায় সারণির মৌলের নাম মনে রাখার ছন্দ

পর্যায় সারণির বৈশিষ্ট্য

বর্তমানে আধুনিক পর্যায় সারণিতে সর্বমোট 118টি মৌল রয়েছে। তাই পর্যায় সারণির এতোগুলো মৌলের নাম কিন্তু সহজে মনে রাখা সম্ভব নয়। কিন্তু পরীক্ষার জন্য হোক বা অন্য যেকোনো কাজে, পর্যায় সারণি -এর মৌলগুলোর নাম, গ্রুপ ও পর্যায়ে এদের অবস্থান মনে রাখা জরুরি।

তবে পর্যায় সারণির মৌলগুলো মনে রাখার কিছু কৌশল আছে যার মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই মৌলগুলোর নাম মনে রাখতে পারি। এর মাঝে একটি ভালো উপায় হলো বিভিন্ন ছন্দের মাধ্যমে মৌলগুলোর নাম মনে রাখা।

যার ফলে আমরা হালকা চর্চা করলেই এগুলো সহজে মনে রাখতে পারি। তাই কিছু ছন্দের মাধ্যমে পর্যায় সারণির মৌলগুলোর নাম মনে রাখার কৌশল দেওয়া হলঃ

গ্রুপ ১ঃ হায় – H – হাইড্রোজেন

লি – Li – লিথিয়াম

না – Na – সোডিয়াম

কে – K – পটাশিয়াম

রুবি – Rb – রুবিডিয়াম

ছেঁচে – Cs – সিজিয়াম

ফেলেছে – Fr – ফ্রানসিয়াম

গ্রুপ ২ঃ  বিরিয়ানি – Be – বেরিলিয়াম

মোগলাই – Mg – ম্যাগনেসিয়াম

কাবাব – Ca – ক্যালসিয়াম

সরিয়ে – Sr – স্ট্রোনসিয়াম

বাটিতে – Ba – বেরিয়াম

রাখো – Ra – রেডিয়াম

গ্রুপ ১৩ঃ   বো – B – বোরন

য়াল – Al – অ্যালুমিনিয়াম

গেলো – Ga – গ্যালিয়াম

ইন্ডিয়া – In – ইনডিয়াম

তেও যাই – Ti – থ্যালিয়াম

গ্রুপ ১৪ঃ    কাল – C – কার্বন

সিলেট – Si – সিলিকন

গেলে – Ge – জারমেনিয়াম

স্বর্ন – Sn – টিন

পাবো – Pb – লেড

গ্রুপ ১৫ঃ   নানা – N – নাইট্রোজেন

পাটেকার – P – ফসফরাস

আসলো – As – আর্সেনিক

সব – Sb – অ্যান্টিমনি

বিলিয়ে – Bi – বিসমাথ

গ্রুপ ১৬ঃ   ও – O – অক্সিজেন

এস – S – সালফার

এস সি – Se – সেলেনিয়াম

তে – Te – টেলুরিয়াম

পড়ে – Po – পোলোনিয়াম

গ্রুপ ১৭ঃ   ফকিরা – F – ফ্লোরিন

কালু – Cl – ক্লোরিন

বরিসাল থেকে – Br – ব্রোমিন

ইস্টিমারে – I – আয়োডিন

আসতেসে – At – অ্যাস্টাটিন

গ্রুপ ১৮ঃ   হিলি – He – হিলিয়াম

নিয়ন্তা – Ne – নিয়ন

আর – Ar – আর্গন

কিশোর – Kr – ক্রিপ্টন

যাবে – Xe – জেনন

রংপুর – Rn – রেডন

পর্যায় ৩ঃ    না – Na – সোডিয়াম

মাযে – Mg – ম্যাগনেসিয়াম

এসে – Al – অ্যালুমিনিয়াম

সিজদায় – Si – সিলিকন

পড়ে – P – ফসফরাস

সবাই – S – সালফার

কালেমা – Cl – ক্লোরিন

আওড়ায় – Ar – আর্গন

এভাবেই আমরা বিভিন্ন ছন্দের মাধ্যমে পর্যায় সারণির মৌলগুলোর নাম,গ্রুপ এবং পর্যায় মনে রাখতে পারি।

ইলেকট্রন বিন্যাসই পর্যায় সারণির মূল ভিত্তি (Electron Arrangement)

ইলেকট্রন বিন্যাসের মাধ্যমে কোনাে মৌল কত নম্বর পর্যায় এবং কত নম্বর গ্রুপে অবস্থান করে তা বের করা যায়। আবার, যে সকল মৌলের বাইরের প্রধান শক্তিস্তরের ইলেকট্রন বিন্যাস একই রকম সে সকল মৌল একই গ্রুপে অবস্থান করে। অপরদিকে যে সকল মৌলের বাইরের প্রধান শক্তিস্তরের ইলেকট্রন বিন্যাস ভিন্ন রকম সে সকল মৌল ভিন্ন গ্রুপে অবস্থান করে।

যে সকল মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসে বাইরের শক্তিস্তরে মােট ইলেকট্রন সংখ্যা 1টি সে সকল মৌল সাধারণত ইলেকট্রন দান করে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হওয়ার প্রবণতা দেখায়। যেমন সােডিয়ামের বাইরের শেলে এটি ইলেকট্রন আছে। তাই সােডিয়াম ঐ 1টি ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হয়।

Na(11)=1s22s22p63s1

Na – e = Na+

আবার যে সকল মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসে বাইরের শক্তিস্তরে মােট ইলেকট্রন সংখ্যা 7টি সে সকল মৌল সাধারণত এটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক আয়নে পরিণত হবার প্রবণতা দেখায়। যেমন-ক্লোরিনের বাইরের শেলে 7টি ইলেকট্রন আছে। তাই ক্লোরিন 1টি ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক আয়নে পরিণত হয়।

Cl (1s22s22p63s23p5) + e — Cl (1s22s22p63s23p6)

অতএব ইলেকট্রন বিন্যাসের মাধ্যমে পর্যায় সারণিতে মৌলসমূহের সঠিক অবস্থান নির্ণয় এবং মৌলসমূহের অনেক ধর্ম ব্যাখ্যা করা যায়। এজন্যই ইলেকট্রন বিন্যাসকেই পর্যায় সারণির মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা।

পর্যায় সারণির কিছু ব্যতিক্রম (Some Exceptions in the Periodic Table)

(a) হাইড্রোজেনের অবস্থান: হাইড্রোজেন একটি অধাতু। কিন্তু পর্যায় সারণিতে হাইড্রোজেনকে তীব্র তড়িৎ ধনাত্মক ক্ষার ধাতু Na, K, Rb, Cs, Fr এর সাথে গ্রুপ-1 এ স্থান দেওয়া হয়েছে।

এর কারণ ক্ষার ধাতুর মতাে H এর বাইরের প্রধান শক্তিস্তরে একটিমাত্র ইলেকট্রন রয়েছে। আবার, হাইড্রোজেনের অনেক ধর্ম ক্ষার ধাতুগুলাের ধর্মের সাথে মিলে যায়।

অন্যদিকে, হ্যালােজেন মৌল (F, cl, Br, I) এর একটি পরমাণু যেমন একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করতে পারে, হাইড্রোজেনও তেমনি একটি ইলেকট্রন গ্রহণ করতে পারে অর্থাৎ H এর অনেক ধর্ম হ্যালােজেন মৌলের ধর্মের সাথেও মিলে যায়।

তবে পর্যায় সারণির হাইড্রোজেনের বেশির ভাগ ধর্ম ক্ষার ধাতুসমূহের ধর্মের সাথে মিলে যাওয়ায় একে ক্ষার ধাতুর সাথে পর্যায় সারণির গ্রুপ 1 এ স্থান দেওয়া হয়েছে।

(b) হিলিয়ামের অবস্থান হিলিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাস He(2) = 1s2। হিলিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাস অনুসারে একে গ্রুপ-2 এ স্থান দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু গ্রুপ-2 এর মৌলসমূহ তীব্র তড়িৎ ধনাত্মক। এদের মৃৎক্ষার ধাতু বলে। অপরদিকে He একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস। এর ধর্ম অন্যান্য নিষ্ক্রিয় গ্যাস নিয়ন,

আর্গন, ক্রিপ্টন, জেনন, রেডন ইত্যাদির সাথে মিলে যায়। He এর ধর্ম কখনই তীব্র তড়িৎ ধনাত্মক মৃৎক্ষার ধাতুর মতাে হয় না। তাই হিলিয়ামকে নিষ্ক্রিয় গ্যাসসমূহের সাথে গ্রুপ-18 তে স্থান দেওয়া হয়েছে।

(c) ল্যান্থানাইড সারির এবং অ্যাকটিনাইড সারির মৌলগুলাের অবস্থান: পর্যায় সারণিতে ল্যান্থানাইড সারির মৌলগুলাে 6 নম্বর পর্যায় ও 3 নম্বর গুপে অবস্থিত এবং অ্যাকটিনাইড সারির মৌলগুলাে 7 নম্বর পর্যায় ও 3 নম্বর গ্রুপে অবস্থিত।

এই অবস্থানগুলােতে ল্যান্থানাইড সারির এবং অ্যাকটিনাইড সারির মৌলগুলােকে বসালে পর্যায় সারণির সৌন্দর্য নষ্ট হয়। কাজেই পর্যায় সারণিকে সুন্দরভাবে দেখানাের জন্য ল্যান্থানাইড সারির এবং অ্যাকটিনাইড সারির মৌলগুলােকে পর্যায় সারণির নিচে আলাদাভাবে রাখা হয়েছে।

জেনে রাখ

১৮৬৯ সালে বিজ্ঞানী ম্যান্ডেলিফ মৌলসমূহকে এর পারমাণবিক ভর অনুযায়ী সাজিয়ে আধুনিক পর্যায় সারণি প্রবর্তন করেছিলেন।

পারমাণবিক ভর অনুযায়ী মৌলসমূহকে সাজালে আর্গন ও পটাসিয়ামের অবস্থান নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়।

১৯১৩ সালে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী হেনরি মোসলে পারমাণবিক সংখ্যার ধারণা দেন। ম্যান্ডেলিফ আধুনিক পর্যায় সারণিতে পারমাণবিক সংখ্যার ধারণা ব্যবহার করে এর সংশোধিত রূপ  প্রকাশ করেন।

ইলেকট্রন সংখ্যা পরিবর্তনে পরমাণুর পরিবর্তন হয় না কিন্তু প্রোটন সংখ্যা পরিবর্তনে পরমাণুর পরিবর্তন হয়।

পর্যায় সারণির মূল ভিত্তি ইলেকট্রন বিন্যাস। কারণ কোনো মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাসই মূলত তার রাসায়নিক ধর্মাবলি নির্দেশ করে

জেনে রাখ

পর্যায় সারণিতে কোনো মৌলের অবস্থান তার ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে জানা যায়।

কোনো মৌলের যতটি শক্তিস্তরে ইলেকট্রন বিন্যস্ত থাকে শক্তিস্তরের সে সংখ্যাই হলো ঐ মৌলের     পর্যায় সংখ্যা।

সাধারণভাবে কোন পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে অবস্থিত ইলেকট্রন সংখ্যাই কোনো নির্দিষ্ট পর্যায়ে উক্ত মৌলের গ্রুপ সংখ্যা।

ইলেকট্রন দ্বারা সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে পূর্ণ মৌলসমূহ গ্রুপ -১৮ তে স্থান পায়।

পর্যায় ৪ এবং পর্যায় ৭ পর্যন্ত যে সকল মৌলের d উপস্তরে ইলেকট্রন প্রবেশ করে তাদের ক্ষেত্রে d উপস্তরে প্রবেশকৃত ইলেকট্রন এবং সর্বশেষ কক্ষপথের ইলেকট্রন সংখ্যার সমষ্টি তার গ্রুপ নির্দেশ করে।

পর্যায় ৬ এবং পর্যায় ৭ এর যে সকল মৌলের সর্বশেষ ইলেকট্রন f উপস্তরে প্রবেশ করে তাদেরকে মূল পর্যায় সারণির নিচে পৃথকভাবে অবস্থান দেয়া হয়।

জেনে রাখ

পর্যায় সারণির একটি পর্যায়ের বামদিকের মৌলগুলো ধাতু। যতই ডান দিকে যাওয়া যায় ততই মৌলগুলো অধাতুতে আবর্তিত হতে থাকে। আবার যে কোনো গ্রুপে যতই নিচের দিকে যাওয়া যায় মৌলসমূহের ধাতু ধর্ম ততই বৃদ্ধি পায়।

Si মৌলটি উপধাতু যা ধাতু ও অধাতু উভয়ের বৈশিষ্ট্য বহন করে।

গ্রুপ -১ এর ক্ষার ধাতুসমূহ প্রত্যেকেই নরম, নিম্ন গলনাংকবিশিষ্ট। এ গ্রুপের ধাতুসমূহের গলনাংক পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে কমে।

পর্যায় সারণির বাম দিক থেকে ডান দিকে অর্থাৎ গ্রুপ-১ থেকে গ্রুপ -১৭ পর্যন্ত মৌলসমূহের গলনাংক ও স্ফুটনাংক প্রথমে বৃদ্ধি পেয়ে (ধাতু পর্যন্ত) পরবর্তীতে (অধাতু থেকে) হ্রাস পায়।

গ্রুপ -১৭ অর্থাৎ হ্যালোজেনসমূহের গলনাংক ও স্ফুটনাংক গ্রুপ -১ এর ক্ষার ধাতুসমূহের তুলনায় অনেক কম হয়। একই গ্রুপের মৌলসমূহের গলনাংক ও স্ফুটনাংক পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে কমে।

পর্যায় সারণির একই পর্যায়ের বামদিক থেকে ডানদিকে পারমাণবিক আকার হ্রাস পায় এবং কোনো গ্রুপের উপর থেকে নিচের দিকে পারমাণবিক আকার বৃদ্ধি পায়।

পারমাণবিক আকার ব্যতীত অন্যান্য ধর্ম যেমন আয়নিকরণ শক্তি, তড়িৎ ঋণাত্মকতা, ইলেকট্রন আসক্তি ইত্যাদি একটি পর্যায়ে পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে বৃদ্ধি পায়।

Write A Comment