কোষ কাকে বলে

জীবজ ক্রিয়াকলাপের একক বৈষম্যভেদ্য পর্দা দ্বারা আবৃত যা অন্য সজীব মাধ্যম ব্যতিকেরেই নিজের প্রতিরূপ নিজেই তৈরী করতে সক্ষম তাকে কোষ বলে । অর্থাৎ জীব দেহের গঠর ও কাজের একক কে কোষ বলে ।

কোষ বিভাজন কি (Cell Division)

যে প্রক্রিয়ায় জীব দেহে একটি মাত্র কোষ থেকে অসংখ্য কোষের বৃদ্ধি ঘটে যার ফলে জীব দেহের বৃদ্ধি এবং প্রজনন সম্পন্ন হয় তাকে কোষ বিভাজন বলে। সাধারনত অ্যামাইটোসিস , মাইটোসিস ও মিয়োসিস পদ্ধতিতে কোষ বিভাজন হয়। মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোষের শক্তিঘর বলা হয়।

শক্তি উৎপাদনের সকল উপাদান যেমন: ক্রেবস চক্র, ফ্যাটি এ্সিড চক্র, ( Electron Transport) ইত্যাদি মাইটোকন্ড্রিয়া এর ভিতরে থাকে। এই উপাদান গুলো প্রক্রিয়া এর মাধ্যম দিয়ে যে সকল শক্তি উৎপন্ন হয় তা দিয়ে জীব তার সকল জৈবিক কাজ পরিচালনা করে। এই জন্য মাইটোকন্ড্রিয়া কে কোষের শক্তিঘর বলা হয়।

কোষের শক্তিঘর কাকে বলে (Powerhouse of Cells)

কোষের শক্তিঘর কাকে বলে
কোষের শক্তিঘর

মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোষের শক্তিঘর বলা হয়। শক্তি উৎপাদনের সকল উপাদান যেমন: ক্রেবস চক্র, ফ্যাটি এ্সিড চক্র, ( Electron Transport) ইত্যাদি মাইটোকন্ড্রিয়া এর ভিতরে থাকে । এই উপাদান গুলো প্রক্রিয়া এর মাধ্যম দিয়ে যে সকল শক্তি উৎপন্ন হয় তা দিয়ে জীব তার সকল জৈবিক কাজ পরিচালনা করে । এই জন্য মাইটোকন্ড্রিয়া কে কোষের শক্তিঘর বলা হয় ।

মাইটোসিস কোষ বিভাজন কি (Mitosis cells)

যে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় প্রকৃত কোষ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষে পরিনত হয় তাকে সাধারনত মাইটোসিস কোষ বিভাজন বলে । এটি একটি অবিচ্ছন্ন বা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া ।

এই বিভাজন প্রক্রিয়ায় প্রথমে নিউক্লিয়াসের বিভাজন ও পরে সাইটোপ্লাজমের বিভাজন ঘটে । এই বিভাজন প্রক্রিয়ায় নিউক্লিয়াস ও ক্রোমোসোম একবার বিভক্ত হয় এবং সৃষ্ট অপত্য কোষ বা নতুন কোষের ক্রোমোসোম সংখ্যা , গঠন ও গুনাগুন মাতৃকোষের মতো হয় ।

এক সমীকরণিক বিভাজন ও বলা হয় । এই বিভাজন দেহকোষে হয়ে থাকে এবং বিভাজনের ফলে কোষের সংখ্যার বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রাণী ও উদ্ভিদ দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে বৃদ্ধি পায় । প্রাণীর দেহকোষ এবং উদ্ভিদের বর্ধ্নশীল অংশের ভাজক টিস্যু যেমন-কান্ড, মূলের অগ্রভাগ , ভ্রূণমুকুল ও ভ্রূণমূল , বর্ধ্নশীল পাতা , মুকুল ইত্যদিতে মাইটোসিস বিভাজন হয় ।

অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন বলতে কি বোঝায় (Abnormal Cells)

জীবদেহে মাইটোসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব অপরিসীম ।অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন টি সাধারনত এই মাইটোসিস কোষ বিভাজনে হয় । মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় একটি থেকে দুইটি , দুইটি থেকে চারটি এভাবে কোষের সংখ্যা বাড়তে থাকে ।

কিন্তু কোষ বিভাজন প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রিত থাকে । কোন কারনে এই নিয়ন্ত্রন নষ্ট হয়ে যাওয়াকে অস্বাভিবক কোষ বিভাজন বলে । মাইটোসিস কোষ বিভাজনের কারনে প্রতিটি কোষের নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম এর মধ্যকার আয়তন এবং পরিমাণগত ভারসাম্য রক্ষিত থাকে । যার ফলে বহুকোষী জীবের দৈহিক বৃদ্ধি ঘটে ।

একই কোষ বার বার বিভাজন হতে হতে অংখ্য কোষের সৃষ্টির মাধ্যমে একটি এক কোষী জীব পূর্ণ্ জীবে পরিণত হয় । এই মাইটোসিস কোষ বিভাজনের ফলে উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজনন সম্পন্ন হয় ।

মাইটোসিস বিভাজন অঙ্গজ প্রজনন সাধিত করে । জনন কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি করে এবর জীবের ক্ষত স্থানে নতুন কোষ সৃষ্টির মাধ্যমে ক্ষতস্থান পুরন করে । মাইটোসিস এর ফলে একই ধরনের কোষের বার বার উৎপত্তি হওয়ায় জীবজগতের গুণগত মার বজায় থাকে ।

কিন্তু অনিয়মিত মাইটোসিস এর ফলে টিউমার এমনকি ক্যান্সার হতে পারে ।ক্যান্সার কোষ ও নিয়ন্ত্রনহীন অস্বাভাবিক কোষ বিভাজনের ফসল । সুতারাং মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্র্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রন নষ্ট হওয়াকে অস্বাভাবিক কোষ বিভাজন বলে ।

কোষ বিভাজন না হলে কি হবে (Cell Division)

জীবদেহেন গঠন ও কাজের একক হলো কোষ । যে প্রক্রিয়ায় একটি মাত্র কোষ থেকে অসংখ্য কোষের সৃষ্টির মাধ্যমে জীবদেহের বৃদ্ধি এবং প্রজনন সম্পন্ন হয় তাকে কোষ বিভাজন বলে । জীবদেহের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ্ প্রক্রিয়া হলো কোষ বিভাজন ।

এই কোষ বিভাজন না হলে জীবের বৃদ্ধি ও প্রজনন অসম্পূর্ণ্ থেকে যাবে ।কারন প্রথম অবস্থায় জীবদেহে একটি মাত্র কোষ থাকে যাকে এককোষী জীব বলে । এককোষী জীব থেকে শুরু করে বহুকোষী জীব সব ক্ষেত্রেই নানা ধরনের কোষ বিভাজন দেখা যায় । যেমন: অ্যামাইটোসিস , মাইটোসিস ও মিয়োসিস কোষ বিভাজন ।

একটি মাত্র কোষ দিয়ে প্রতিটি জীবের জীবন শুরু হয় । প্রকৃতপক্ষে এই কোষটির উৎপত্তি হয় আগের কোন কোষ থেকে । কোষ বিভাজন দৈহিক আকৃতি বাড়ায় কোনোটি আবার জনন কোষ সৃষ্টি করে আবার কোনটি দ্বিবিভাজন পদ্ধতিতে সংখ্যা বৃদ্ধি করে ।

যেমন : ব্যাটেরিয়া, অ্যামিবা , প্লাজমোডিয়াম ইত্যাদি । এসব জীবকোষ বিভাজনের মাধ্যমেই একটি কোষ থেকে অসংখ্য এককোষী জীবে পরিণত হয় ।

আবার মানুষ , আম গাছ , বট গাছ ইত্যাদি বহুকোষী জীব । একটি নিষিক্ত ডিম্বানু থেকে কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় এক সময় কোটি কোটি কোষ নিয়ে গঠিত মানুষ । আবার কোষ বিভাজনের মাধ্যমেই পুং এবং স্ত্রী গ্যামেট সৃষ্টি হয়ে নতুন প্রজন্মের জন্ম হয় । অর্থাৎ কোষ বিভাজন না হলে জীবের সৃষ্টি ও প্রজনন কখনো সম্ভব না ।

কোষ বিভাজন কতো প্রকার ও কি কি ?

জীবেদেহে তিন প্রকার কোষ বিভাজন দেখা যায় যথা-

১. অ্যামাইটোসিস

২. মাইটোসিস

৩. মিয়োসিস

অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন বলতে কি বোঝায় (Amitosis Cells)

যে প্রক্রিয়ার মাধ্যামে কোষের নিউক্লিয়াসটি সরাসরি দুটি অংশে ভাগ হয়ে যায় এবং পরষ্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ‍দুটি অপত্য ‍নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি করে তাকে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন বলে । ব্যাটেরিয়া, নিলাভ সবুজ শৈবাল , ইস্ট প্রভৃতি জীবকোষে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন হয়।

অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন এর গুরুত্ব কি ?

যে প্রক্রিয়ার মাধ্যামে কোষের নিউক্লিয়াসটি সরাসরি দুটি অংশে ভাগ হয়ে যায় এবং পরষ্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ‍দুটি অপত্য ‍নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি করে তাকে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন বলে । এটিকে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন ও বলা হয় । ব্যাকটেরিয়া, নিলাভ সবুজ শৈবাল , ইস্ট প্রভৃতি জীবকোষে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন হয়।

উদ্ভিদ ও প্রাণী জগতে অ্যামাইটোসিস এর গুরুত্ব অপরিসীম যেমন: অ্যামাইটোসিস পদ্ধতির ফলে ব্যাকটেরিয়া, নিলাভ সবুজ শৈবাল , ইস্ট প্রভৃতি জীবকোষে তাদের বংশগতির ধারা বজায় থাকে ফলে বাস্তুসংস্থানে শক্তি ও পুষ্টির সরবরাহ ঠিক থাকে ।

এই অনুজীবগুলো জৈব বস্তুকে পচিয়ে অজৈব বস্তুতে পরিণত করে যা উদ্ভিদ গ্রহন করে নিজের খাদ্য তৈরী করে । যার কারনে বাস্তু সংস্থানের পুষ্টিপ্রবাহ প্রক্রিয়া ক্রিয়াশীল থাকে ।আবার ইস্ট , পেনিসিলিয়াম বেকারী ও ঔষুধ শিল্পে ব্যবহার করা হয় ।

পেনিসিলিয়াম থেকে প্রস্তুতকৃত ঔষধ এন্টিবায়োটিক ঔষুধ মানুষের জীবন বাঁচায় ।এমনকি মাটির উর্ব্রতা বৃদ্ধিতে এসব অনুজীব ব্যবহার করা হয় । অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে এসব অনুজীব তাদের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধি করে অর্থাৎ জীব জগতে অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব অপরিসীম ।

অ্যামাইটোসিস এর বৈশিষ্ট গুলো কি কি ?

জীব জগতে কোষ বিভাজনে প্রথম ও ভিশন গুরুত্বপূর্ণ কোষ বিভাজন হলো অ্যামাটোসিস কোষ বিভাজন ।এটির বৈশিষ্টগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:

  • জিটিল মাধ্যমিক পর্যায় ছাড়াই অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন ঘটে ।
  • এই প্রক্রিয়ায় কোষের নিউক্লিয়াস ধীরে ধীরে লম্বা হয় এবং পরে ডাম্বেল এর আকার ধারন করে ।
  • নিউক্লিয়ার মেমব্রেন এর অবলুপ্তি ঘটে না ।
  • মাকুযন্ত্রের আবির্ভাব ঘটে না ।
  • অ্যামাইটোসিস কে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলে ইত্যাদি ।

অ্যামাইটোসিস বলতে কি বোঝায় ব্যাখ্যা করো ?

সাধারনত জীবদেহে তিন ধরনের কোষ বিভাজন দেখা যায় যার মাধ্যমে জীবদেহের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধি সম্পন্ন হয় । এই কোষ বিভাজনে একটি গুরুত্বপূর্ণ্ কোষ বিভাজন হলো অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন । এই কোষ বিভাজন প্রক্রিয়ায় কোষের নিউক্লিয়াসটি প্রত্যক্ষ ভাবে দুটি অংশে ভাগ হয় ।

মাঝের সরু অংশটি ক্রমশ আরো শরু হয়ে পরষ্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি করে । যার ফলে সাইটোপ্লাজম ও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায় এবংদুটি অপত্য কোষের ‍সৃষ্টি করে ।

ব্যাকটেরিয়া, নিলাভ সবুজ শৈবাল , ইস্ট প্রভৃতি জীবকোষে এধরনের কোষ বিভাজন ঘটে । জীব জগতে বাস্তুসংস্থান সচল রাখা মাটির উর্ব্রতা বৃদ্ধি করে খাদ্য উৎপাদন করা ,ঔষুধ তৈরী ও উদ্ভিদের খাদ্য প্রস্তুত প্রক্রিয়া সচল রাখতে অ্যামাইটোসিস গুরুত্বপূর্ণ্ ভূমিকা পালন করে । যদি এই প্রক্রিয়া না থাকতো তাহলে জীব জগতে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হতো ।

Write A Comment